মোঃ জেড এইচ সিদ্দিকী
স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা।
বিপিডিসি কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব জনাব মোঃ জিয়াউল হক সিদ্দিকী বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকী গতকাল বুধবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আমরা বিপিডিসি পরিবার মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, সাবেক সংসদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকী গতকাল বুধবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। নূরে আলম সিদ্দিকী ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়ার নুরুন্নবী সিদ্দিকীর ছেলে এবং ঝিনাইদহ-২ আসনের সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকীর বাবা।
গতকাল বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে হেলিকপ্টারে ঝিনাইদহে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামে তার মরদেহ আনা হয়। পরে বাদ জোহর ঝিনাইদহ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে তাকে ঢাকা গুলশানের আজাদ মসজিদে নেওয়া হয়। এ সময় নূরে আলম সিদ্দিকীকে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়। এই নেতাকে এক নজর দেখতে ঝিনাইদহের হাজার হাজার মানুষ ঝিনাইদহ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এসে জড়ো হতে শুরু করে।
নূরে আলম সিদ্দিকী ঝিনাইদহ হাইস্কুল থেকে মেট্রিক পাসের পর কিছুদিন ঝিনাইদহ কেসি কলেজে পড়াশোনা করেন। এরপর ঢাকা জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। নূরে আলমের বাবা নুরুন্নবী সিদ্দিকী ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুসারী। স্কুলজীবনে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তখন থেকেই তিনি ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী হন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ওই বছরের ৭ জুন ৬ দফা আন্দোলনের একটি বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন। আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে মনু মিয়া নামে একজন শ্রমিক নিহত হন। নূরে আলম সিদ্দিকী মনু মিয়ার লাশ কাঁধে নিয়ে মিছিল করেন। ওই বছরই বঙ্গবন্ধুসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখন তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশি নির্যাতনে তার একটি হাত ভেঙে যায়।
সত্তরের দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা নূরে আলম সিদ্দিকী ১৯৭০-৭২ মেয়াদে ছাত্রলীগ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। মুক্তিযুদ্ধের চার খলিফার একজন হিসেবে তাকে উল্লেখ করা হয়। মুজিব বাহিনীর অন্যতম কর্ণধার ছিলেন তিনি।
নূরে আলম সিদ্দিকী ছয় দফা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তিনি ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন যশোর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৯৬ সালের সপ্তম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে অংশ নিয়েছিলেন নূরে আলম সিদ্দিকী। তিনি প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ আতাউর রহমান মুকুল
What's App: +8801710-489904 E-mail: [email protected]