কমরেড স্বপন, বার্তা বিভাগঃ
রমজান মাসে দিনাজপুরের হিলিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। কাঁচা তরকারি, পেঁয়াজ মাছ, মাংস, দুধ, লেবুর, দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। ক্রেতারা বলছেন, প্রতিবছর রোজা এলেই বিক্রেতারা এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। আর বিক্রেতারা বলছেন, কাঁচাপণ্য মজুদ রাখার কোনো সুযোগ নেই। উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
হিলি সবজির বাজারে কথা হয় মো. রহমত আলীর সঙ্গে। রহমত আলী বলেন, ‘আমি নিম্ন আয়ের মানুষ। শ্রমিকের কাজ করি। রোজার আগে প্রতিদিন সাড়ে ৩ থেকে ৪ শ টাকা মজুরি পেতাম। রমজান মাসে কাজকর্ম একটু কমে গেছে। তাই মজুরি কম হচ্ছে। কিন্তু দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। মজুরির টাকা দিয়ে চলা দায় হয়ে পড়েছে।’
রহমত আলী বলেন, ‘রমজান মাস শুরুর আগেই বাজারে পটল, ঢেঁড়শ। তখন প্রতিকেজি পটল ও ঢেঁড়শের দাম ছিল ৪০ টাকা কেজি। আর রোজা শুরুর পর থেকে কিনতে হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে থাকায় দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০ টাকা। আর আজ (৩০ মার্চ) কিনলাম ৪০ টাকা কেজি। তবে আলু বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই ৩০ টাকা কেজি দরের আলু ৩০ টাকা কেজি দরেই বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৬০ টাকা কেজির দুধ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ২০ টাকা হালির (৪ টি) বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা হালি দরে।’
মাছ কিনতে আসা মো. ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘প্রতিটি মাছের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রোজার আগে ১৮০ টাকা কেজি দরের রুই বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা, ১৫০ টাকার তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, বড় পাঙ্গাস মাছের কেজি ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে। সেই পাঙ্গাস এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে।’
মাংস ক্রেতা আব্দুর রউফ বলেন, ‘কেজিতে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে ৫০ টাকা। আগে ৬৫০ টাকা কেজি দরে কিনলেও আজ ( ৩০ মার্চ) কিনলাম ৭০০ টাকা কেজি দরে। আর খাসির
মাংসের কেজি ছিল ৭০০ টাকা । প্রথম রোজা থেকে বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত । ৩ দিন আগে মঙ্গলবার ( ২৮ মার্চ) প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২৪০ টাকা কেজি দরে হয়েছিল। আর আজ বিক্রি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি দরে।’
সবজি বিক্রেতা মো. গোলাম রব্বানী বলেন, ‘হিলি বাজারে যেসব কাঁচাপণ্য আসে, তার সবই বাইরে থেকে আসে। রোজা শুরুর পর থেকে সরবরাহ কমে গেছে। বাইরে থেকে কোনো সবজি বিক্রেতা বাজারে এলেই সব দোকানদার হুমড়ি খেয়ে পড়ে। তাই বিক্রেতাও সুযোগ পেয়ে বসে। ইচ্ছেমতো দাম হাঁকে। এভাবেই বাড়ছে প্রতিটি সবজির দাম।’
মাছ বিক্রেতা মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘মাছের খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে মাছের দামও বেড়েছে। তাই বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছি। তবে আমরা বেশি লাভ করি না। কেজিকে ৫ থেকে ১০ টাকা লাভ করি।’
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নুর-এ-আলম এ প্রতিনিধি কে বলেন, ‘রোজা শুরুর প্রথমদিকেই ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। কেউ যেন অতিরিক্ত দাম না নেয়। অভিযোগ পেলে জরিমানা করা হবে। এছাড়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করছে।’