পানির নিচে নিম্নাঞ্চলের রবিশস্য ক্ষেত
মোঃ আলী হোসেন মোল্লা
পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি
অসময়ের বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে পটুয়াখালীর নিম্নাঞ্চলের রবিশস্য ক্ষেত। এদিকে পানি অপসারণ করতে না করতেই আকাশে রোদ উঠছে। তাই পানি গরম হয়ে মরে যাচ্ছে গাছ। এতে দিশেহারা কৃষক।
সরজমিনে রাঙ্গাবালী উপজেলার বাহেরচর গিয়ে দেখাগেছে, ক্ষেতের মধ্যে থৈথৈ পানি। কষ্টের ফসল ডুবে আছে বৃষ্টির পানিতে। তাই কৃষক মনির মৃধার মাথায় হাত! এবছর সে চার একর জমিতে প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয় করে মুগডাল, মরিচ এবং তরমুজ আবাদ করেন। এর অধিকাংশই এখন ক্ষতির মুখে। তাই চরম দুশ্চিন্তায় সে। শুধু এই কৃষকের জমি নষ্ট হয়েছে এমন নয়। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বাহেরচর, চর মোন্তাজ ও চালিতাবুনিয়ার নিম্নাঞ্চলের ফসলি ক্ষেত। পানি জমে নষ্ট হচ্ছে মুগডাল, ফেলন ডাল, তরমুজ, মরিচ, আলু, বাদাম ও সূর্যমূখী সহ অন্যান্য রবিশস্য। এমন অবস্থায় দিশেহারা কৃষকরা। এখনো অনেক ফসলই পাকেনি। তাই ক্ষেত থেকে তুলে ঘরে নিতেও পারছেন না। এদিকে পানি নিষ্কাশন করতে না করতেই আকাশে রোদ উঠেছে। রোদের তাপে মরে যাচ্ছে ফসল। জেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, পটুয়াখালীতে এবার এক লাখ ৯৬ হাজার হেক্টর জমিতে রবিশস্য আবাদ হয়। এরমধ্যে বৃষ্টির পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২৭ হাজার ৩১শ হেক্টর জমির ফসল। এর মধ্যে বেশি ক্ষতি হয়েছে রাঙ্গাবালী উপজেলার বাহেরচর ও চরমোন্তাজ।
রাঙ্গাবালী উপজেলার বাহেরচর গ্রামের কৃষক স্বপন ডাক্তার জানান, অন্যের জমি বর্গা নিয়ে মুগডাল এবং মরিচ চাষ করেছি। ধারদেনা করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ করছি। চিন্তা করছিলাম এবার ভালো ফলন হবে। দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বিক্রি হবে। তা দিয়ে পুরো বছরের সংসারের খরচ এবং ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চলে যাবে। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টির পানিতে ক্ষেত তলিয়ে গেছে। সব ফসলই এখন পচনের মুখে পরেছে। যদি এগুলো পাকা থাকতো তাহলে তুলে আনতে পারতাম। কিন্তু কাচাঁ জিনিস তুলে এনেওবা কি লাভ! তাই ক্ষেতের মধ্যেই নষ্ট হচ্ছে। আমাদের এখন আর কোন উপায়ন্ত নেই। কি খাব? কি নিয়ে সংসার চালাবো? রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.ইকবাল মাহমুদ জানান, জলাবদ্ধ জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করা হচ্ছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ আতাউর রহমান মুকুল
WhatsApp: +880 1710-489904, E-mail: [email protected]