বিরামপুরে রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি
এম,ডি রেজওয়ান আলী বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি-
দিনাজপুর বিরামপুরে বিরামপুরে রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অসহনীয় অবস্থা বিপাকে পড়েছে জনসাধারণ।এবিষয়ে আজ ১১ এপ্রিল সরজমিনে বিরামপুর শহরের হাট বাজার গুলো পরিদর্শনে জানা যায় যে,বাজারের প্রতিটি পণ্যের দাম ঊর্ধ্বগতি জনসাধারণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টির দেখা দিয়েছে।উল্লেখ্য রমজানে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী-সচিবআসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। এরপরেও বাজারগুলোতে দ্রব্যমুল্যের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ের বাহিরে চলে গেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের তেমন কোন নজরদারির চিত্র এ পর্যন্ত কোন হাট বাজারে দেখা যায় নাই। এবিষয়ে স্থানীয় জনসাধারণের নিকট জানতে চাইলে তারা জানান,স্থানীয় প্রশাসন উপজেলার অন্তর্ভুক্ত সকল হাট বাজারগুলোতে নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করলে হয়তোবা দ্রব্যমূল্যের অগ্রগতি অনেকটাই কমে আসতো। কিন্তু তারা নিয়মিত কোন অভিযান না করার কারণে বাজারগুলোর দ্রব্যমূল্য ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে ক্রেতাগণ। পক্ষান্তরে,রোজায় দুটি ধাপে ১০ কোটি মানুষের কাছে ওএমএস ও টিসিবির পণ্য দেয়া হবে। এদিকে সেচের জন্য রাত ১১টার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরো জানা গেছে,রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে করণীয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে বৈঠকের শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন,বিগত বছরের তুলনায় অনেকগুণ বেশি খাদ্য মজুত রয়েছে। দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এবার দুই ধাপে ১০ কোটি মানুষের কাছে ওএমএস ও টিসিবির পণ্য পৌঁছে দেয়া হবে। তাই রমজানের আগে দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত রয়েছে মর্মে আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) জনসাধারণকে আতঙ্কিত হয়ে কেনাকাটা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বলে জানা যায়।
বৈঠকে রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে দেশব্যাপী খাদ্য মজুত ও সরবরাহ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা,সার্বিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা,পানি সরবরাহ এবং ঘরমুখো যাত্রীদের নির্বিঘ্নে যাত্রা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আরও বলেন,বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী,রমজানের আগে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় আমাদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত রয়েছে,যা আমাদের জন্য সন্তোষজনক। রোজার সময় নিত্যপণ্য যাতে মানুষের কাছে পৌঁছায়,সাপ্লাই চেইন যাতে ঠিক থাকে সে জন্য আমরা সবাইকে নির্দেশ দিয়েছি বলে জানান। এ প্রেক্ষাপটে তিনি সবাইকে আতঙ্কিত হয়ে কেনাকাটা না করার অনুরোধ জানান।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া আশ্বস্ত করেন, একবারে অতিরিক্ত খাবার কেনার পরিবর্তে প্রত্যেকে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনলে কোনো সমস্যা হবে না। অর্থাৎ যখন যার যা প্রয়োজন,তা নিলে কারও কোনো সমস্যা হবে না। আমরা খুব ভালোভাবে,সুন্দরভাবে রোজা এবং ঈদ উদ্যাপন করতে পারব।
সরকার এরই মধ্যে চিনি আমদানির ওপর থেকে কর কমানোয় এবং ট্যারিফ ভ্যালু তুলে দেয়ায় রমজানে চিনির মূল্য কম থাকবে। সরকারের গৃহীত ব্যবস্থায় রমজানের আগে চিনির আমদানি অনেক বেশি হবে বলে তোফাজ্জল হোসেন মনে করেন। এছাড়া খোলা বাজারে বিক্রয় (ওএমএস) যথারীতি অব্যাহত থাকবে এবং টিসিবির নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে: ভোজ্যতেল,চিনি,চাল, পেঁয়াজ ও ছোলা। টিসিবি ঢাকা শহরে খেজুরও বিক্রি করবে বলে জানান তিনি।
রমজান ও ঈদ সামনে রেখে প্রায় ১০ কোটি মানুষ লাভবান হবে জানিয়ে তিনি বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় এক কেজি চালও ১৫ টাকায় বিক্রি করা হবে। মুখ্য সচিব আরও বলেন,রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে। ইফতার ও সেহরির সময় যথাযথ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং রাত ১১টার পর সেচের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। এবার চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি পণ্য মজুত রয়েছে। কেউ অযৌক্তিকভাবে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ জন্য বিষয়টি সারা দেশে কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো.আমিনুল ইসলাম খানসহ বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বিরামপুর উপজেলা শহরের অন্তর্ভুক্ত সকল হাটবাজারে তেমন কোনো নজরদারি নেই ফলে বিপাকে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।