রংপুরে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, অতঃপর গালায় ফাঁস দিলো স্বামী
রংপুরের কাউনিয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে সন্তানের সামনে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছে মানষিক ভারসাম্যহীন স্বামী রবীন্দ্রনাথ। শনিবার (৫ আগষ্ট ) দিবাগত রাতে উপজেলার কূর্শা ইউনিয়নের ধর্মেশ্বর ড্রাইভারপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
ছুরিকাঘাতে নিহত শুভা রাণী (৪৪) রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী। আর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করা রবীন্দ্রনাথ ড্রাইভারপাড়া গ্রামের গৌরাঙ্গ চরণের ছেলে।
আজ শনিবার সকাল তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাউনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফরহাদ মন্ডল।
এদিকে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পারিবারিক কলহের জেরে মানসিক রোগী রবীন্দ্রনাথের সাথে তার স্ত্রী শুভা রাণীর ঝগড়া লাগে। ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্বামী রবীন্দ্ররাথ ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। এসময় ছুরির আঘাতে গুরুতর জখম হন স্ত্রী শুভা রাণী। তাদের ঝগড়া ও আত্মচিৎকারে ছুটে আসে রবীন্দ্রনাথের ছোট ভাই চেতনা এবং চচাতো ভাই গোলাপ চন্দ্রসহ আশপাশের লোকজন। মানসিক ভারসাম্যহীন রবীন্দ্রনাথের হাতে ধারালো ছুরি দেখে ভয়ে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস না পেলেও ভাবিকে বাঁচাতে গিয়ে ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে ছোট ভাই চেতনা চন্দ্র গুরুতর জখম হয়।
পরে এলাকাবাসী ছুরিকাঘাতে জখম হওয়া শুভা রাণী ও আহত চেতনাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোর ৬টার দিকে শুভা রানীর মৃত্যু হয়। বর্তমানে আহত চেতনা চন্দ্র চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে, স্ত্রীকে ধারালো ছুরি দিয়ে গুরুতর জখম করে ভোর রাতেই বাড়ির গোয়াল ঘরে ঢুকে দরজা আটকিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন স্বামী রবীন্দ্রনাথ। খবর পেয়ে শনিবার ভোর ৭টার দিকে কাউনিয়া থানা পুলিশ এসে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।
নিহতদের ছেলে উজ্জল চন্দ্র বলেন, বাবা রবীন্দ্র দুই-তিন বছর ধরেই মানসিক রোগে ভুগছিলেন। মাঝে মধ্যেই এরকম করত কিন্তু রাতে হঠাৎ মাকে ধারালো দা-ছুরি দিয়ে এলোপাতারি কোপ দিতে থাকে। মাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার চাচাসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বাবাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আমরা রাতেই ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেছিলাম। বাবার হাতে ধারালো দা থাকায় আমরা তার সামনে কেউ যেতে সাহস পাইনি। মাকে কুপিয়ে ওই অবস্থায় বাবা গোয়াল ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
রংপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান জানান, এ রকম একটি ঘটনা শুনে আমরা সকালেই ঘটনাস্থলে গিয়েছি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বাকি বিষয়গুলো তদন্তাধীন রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ আতাউর রহমান মুকুল
WhatsApp: +880 1710-489904, E-mail: [email protected]