তিস্তার চরের চারিদিক বাঁধ বেধে নদী ভাঙন রোধ করা হবে- এমপি শামীম
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, তিস্তার ভয়াল গ্রাস থেকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চল গুলোকে রক্ষা করা হবে। বিশেষ করে কাপাসিয়া ইউনিয়নের প্রতিটি চরের চারিদিক বেঁধে তিস্তার ভাঙন রোধ করা হবে।
গত রোববার সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের সঙ্গে বন্যা সহনশীলতা বিষয়ক গণশুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন। কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের সহযোগিতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের (জিইউকে) ফ্লাড রেজিলিয়েন্স প্রজেক্টের আয়োজনে এ গণ শুনানির অনুষ্ঠিত হয়।
এমপি শামীম হায়দার পাটোয়ারী আরও বলেন, এই মুহুর্তে তিস্তার ভাঙন রোধে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বড় কয়েকটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। খুব শীঘ্রই আরও নদী শাসনের জন্য বিশাল বরাদ্দ আনা হবে। এই চরাঞ্চলে শিক্ষা প্রসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা হবে । সেইসঙ্গে চরাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হবে।
চরাঞ্চলের মানুষের দাবিগুলো সংসদে উত্থাপন করার আশ্বাস দিয়ে তিনি আরও বলেন, চর উন্নয়ন বোর্ড গঠনের দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছি। চর উন্নয়ন বোর্ড গঠন হলে চরাঞ্চলের মানুষের সকল সমস্যা নিরসন হয়ে যাবে। চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের জন্য পাকা রাস্তা করে দিতে না পারলেও হেরিংবন্ড করে দিব ইনশাআল্লাহ।
উপজেলা ক্লাস্টার কন্সাল্টেটিভ গ্রুপের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে বক্তব্য রাখেন কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন সরকার, সুন্দরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বুলু, সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল ইসলাম, উপজেলা ক্লাস্টার কন্সাল্টেটিভ গ্রæপের সহ-সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ কুমার দেব সর্মা, ফ্লাড রেজিলিয়েন্স প্রজেক্টের এফও ডলি সুলতানা।
ফ্লাড রেজিলিয়েন্স প্রজক্টের ম্যানেজার শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় গণশুনানিতে বিভিন্ন প্রশ্ন উপস্থাপন করেন- ভাটি কাপাসিয়া কমিউনিটি রেজিলিয়েন্স অ্যাকশন গ্রæপের (ক্রাগ) সভাপতি রাজা মিয়া, ভাটি বুড়াইল কমিউনিটি রেজিলিয়েন্স এ্যাকশন গ্রুপের (ক্রাগ) সভাপতি নুর হোসেন, দুলাল মিয়া, আব্দুর রউফ সরকার, মোহাম্মদ আলী, জামিউল ইসলাম, ফাতেমা বেগম, জাহানারা বেগম প্রমুখ।
তিস্তা নদীর ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে খনন করে স্থায়ীভাবে কৃষি আর মৎস্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করার দাবি জানিয়ে গণশুনানিতে চরাঞ্চলের বাসিন্দারা বলেন, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার সংযোগস্থলের এক কিলোমিটার পূর্ব পর্যন্ত নদী খনন, নদীর দুই তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, ড্রেজিং করে যে মাটি উত্তোলন করা হবে তা নদীর দুপাশে ভরাট করলে ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে। তিস্তার কারণেই বর্ষা-খরা দুই মৌসুমেই চরম দুর্ভোগের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হয়। আমরা সরকারের কাছ থেকে এখন আর কোনো রিলিপ চাই না। আমরা এই রাক্ষসী তিস্তা নদীর করাল গ্রাস থেকে স্থায়ীভাবে বাঁচতে চাই। নদীর ভাঙনের কারণে আমরা স্থায়ীভাবে কোথাও মাথা গুঁজে থাকতে পারি না। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে চরাঞ্চলের মানুষ একেবারেই বঞ্চিত। স্থায়ীভাবে তিস্তা নদীর ভাঙনরোধ করতে পারলে চরাঞ্চলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা দ্রæত পৌঁছাবে। তাই প্রয়োজন নদীর খনন। এছাড়া চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষদের বন্যা সহনশীল বসতভিটা উঁচুকরণ, বন্যা সহনশীল টিউবওয়েল স্থাপন, স্কুল মাঠ উঁচুকরণ, চরাঞ্চলে নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য কুঠির শিল্পসহ কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
গণশুনানি শেষে জিইউকে প্রকল্পের রাস্তার উদ্বোধন করেন।