দেলোয়ার হোসাইন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া অসহায় ও প্রতিবন্ধী পরিবারকে বসত-ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে ‘আর্ন এন্ড লিভ’ নামের একটি মানবিক সংস্থা।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে নির্মাণ কাজ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘর বুঝিয়ে দেয়া হয় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিবন্ধী আব্দুল আউয়াল মিয়ার পরিবারকে। আর্ন এন্ড লিভ’র দেওয়া ঘর পেয়ে খুশি প্রতিবন্ধী আব্দুল আউয়াল মিয়ার পরিবার।
প্রতিবন্ধী আব্দুল আউয়াল মিয়া সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের চাচীয়া মীরগঞ্জ গ্রামের মহুবর রহমানের ছেলে।
জানা যায়, আব্দুল আউয়াল মিয়া শারিরীক প্রতিবন্ধী। চার সদস্যের পরিবারের একটি মাত্র থাকার ঘর। এই ঘরেই সবাই গাদাগাদি করে থাকতেন। সম্প্রতি হঠাৎ করে আগুনে ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে প্রতিবন্ধী আব্দুল আউয়ালের। আহুনে নিঃশ্ব হওয়ার পর খোলা আকাশের নিচে পলিথিন টাঙিয়ে বসবাস করতে থাকেন পরিবারটি। বিষয়টি নজরে আসে আর্ন এন্ড লিভ’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন জেসির। উদ্যোগ নেন পাশে থাকার। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন প্রতিবন্ধী আব্দুল আউয়াল মিয়ার পরিবারের প্রতি। ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য আর্ন এন্ড লিভ’র স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী টিমকে নির্দেশ দেন ফরিদা ইয়াসমিন জেসি।
সমাজ এবং সমাজের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতার কথা মাথায় নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রমে নামেন আর্ন এন্ড লিভ’র কর্মীরা। নির্মাণ সমগ্রী কেনা থেকে শুরু করে ঘর নির্মাণ করে তা হস্তান্তর পর্যন্ত তদারকি করেন সংগঠনটির কর্মীরা। টিনশেড ঘরটি প্রায় ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে সংগঠনটি। এতে সহায়তা করেন আর্ন এন্ড লিভ’র সদস্য দেলোয়ার হোসাইন শাকিল, মাহাফুজার রহমান মাইদুল, আমিনুল ইসলাম, তানভীর রহমান, শাহজাহান মিয়া, রাসেল মিয়াসহ উপজেলা শাখার সদস্যরা।
ঘর হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী অধ্যাপক এম এ মাসুদ, তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রাজু মিয়া, ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার মো. রুবেল মিয়া, আর্ন এন্ড লিভ’র জেলা টিম লিডার দেলোয়ার হোসাইন শাকিল, সদস্য মাহাফুজার রহমান মাইদুল, আমিনুল ইসলাম, তানভীর রহমান, শাহজাহান মিয়া, রাসেল মিয়া, জীবন মিয়া প্রমূখ।
ঘর পেয়ে প্রতিবন্ধী আব্দুল আউয়াল মিয়া বলেন, একটি থাকার ঘর ছিল, তাও আগুনে পুড়ে গেছে। আজ যাদের সহযোগিতায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে ঘরটি পেলাম তাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ। নতুন ঘর পেয়ে আমরা মহাখুশি। দোয়া করি যারা ঘরটি দিলেন তারা আরও ভালো ভালো কাজ করুক।
আর্ন এন্ড লিভ’র জেলা টিম লিডার দেলোয়ার হোসাইন বলেন, প্রতিবন্ধী আউয়াল মিয়াকে একটি টিন শেড ঘর দিতে পেরে আমরাও খুশি। ফরিদা ইয়াসমিন জেসি আপার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রায় ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে ঘরটি নির্মাণ করে দেওয়া হলো। অসহায় ও প্রতিবন্ধীদের সাহায্য সহযোগিতায় আমাদের সংগঠনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার মো. রুবেল মিয়া এমন মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, প্রতিবন্ধী আব্দুল আউয়াল মিয়ার মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিল সংগঠনটি। এটি একটি মহতী উদ্যোগ। দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সংঠনটি প্রতিবন্ধী, অসহায়, দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এধরণের কাজ সমাজসেবায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন বলে মনে করি।
আর্ন এন্ড লিভ’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন জেসি বলেন, প্রতিবন্ধী আব্দুল আউয়াল মিয়াকে একটি ঘর উপহার দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। আর্ন এন্ড লিভ প্রতিবন্ধী মানুষের প্রত্যয়ের প্রতীক। আমরা ২০১৫ সালে কার্যক্রম শুরু করেছি। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আমাদের কাজ চলছে অবিরত।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানগ্ন থেকেই ‘আর্ন এন্ড লিভ’ নামের এই মানবিক সংগঠনটি সেবা দিয়ে যাচ্ছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিবন্ধী, গরিব-অসহায়, এতিম, হতদরিদ্রদের। পাশাপাশি সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের সামলম্বী করতে সারাদেশে কাজ করে যাচ্ছে।