নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাষ্ট্রক্ষমতার পটপরিবর্তনের তিন দিন পর আজ বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের প্রস্তাব অনুযায়ী এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রাত সাড়ে ৮টায় বঙ্গভবনে শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের।
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ড. ইউনূসের পাশাপাশি অন্য উপদেষ্টাদেরও শপথ পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শপথ অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বঙ্গভবনের দরবার হল। এতে প্রায় ৪০০ জন অতিথি যোগদান করবেন বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে জানান, রাত সাড়ে ৮টায় এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্য সংখ্যা কত হবে তা এখনও জানা যায়নি। তবে ১১ থেকে ১৫ সদস্যের এই সরকার হতে পারে বলে আলোচনা রয়েছে, যারা একই অনুষ্ঠানে শপথগ্রহণ করবেন।
জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, প্রায় ৪০০ অতিথির জন্য দরবার হলের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। রাজনীতিক, শিক্ষাবিদ, কূটনীতিকসহ সরকারি ও সামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ২টা ১০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় প্যারিস থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বহনকারী এমিরেটসের ফ্লাইট। সেখানে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন।
এরপর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট হয়ে গুলশানের বাসায় ওঠেন ড. ইউনূস, যেখানে সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে পিজিআর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। এখান থেকে বিকেল ৫টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার দিকে রওনা হন তিনি।
জানা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে এই ভবনেই থাকবেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এ অর্থনীতিবিদ। এখান থেকেই কার্যক্রম পরিচালনা করবেন তিনি।
পদত্যাগ করে শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর বিক্ষুব্ধ জনতা ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনে। এর ফলে এই দুই জায়গায় আপাতত অফিস করা বা বসবাস করার মতো পরিবেশ নেই।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও বাসভবন প্রস্তুত করার সঙ্গে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরপরই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’কে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও বাসভবন হিসেবে গড়ে তোলার কাজ করছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এরপর ৬ আগস্ট বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান ও ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে দেশের পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।