1. [email protected] : Ataur Rahman : Ataur Rahman Mukul
  2. [email protected] : Eiditor 1 : Eiditor 1
  3. [email protected] : Ataur Rahman : Ataur Rahman
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সুন্দরগঞ্জে বালতির পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যু গাইবান্ধায় জামায়াতের আমীরের আগমন উপলক্ষে সুন্দরগঞ্জ জামায়াতের লিফলেট বিতরণ রংপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের শ্রদ্ধা সুন্দরগঞ্জে প্রাণি সম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল— জনবল সংকটে সেবা বিঘ্নিত,সাবস্টেশন বন্ধ লেখক সংসদের মুখপত্র ‘ঐতিহ্য’র মোড়ক উম্মোচন নীলফামারীতে শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত মার্চে খুলে দেয়া হবে তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু – প্রধান প্রকৌশলী সুন্দরগঞ্জে বিনামুল্যে বীজ ও সার বিতরণ সুন্দরগঞ্জে জামায়াত কর্মীকে হত্যা, আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার

শীতের সকালে মিষ্টি খেজুরের রসের স্বাদে আত্মার তৃপ্তি

এম,ডি রেজওয়ান আলী দিনাজপুর প্রতিনিধি-
  • Update Time : সোমবার, ১ জানুয়ারি, ২০২৪
  • ৭৮ Time View

এম,ডি রেজওয়ান আলী দিনাজপুর প্রতিনিধি-

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় খেজুর রস সংগ্রহ ও রস থেকে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। শীত আসলেই প্রকৃতি সাজে নতুন রূপে। সকালে কুয়াশায় চাদরে মোড়ানো থাকে চারদিক। তারপর দেখা মেলে মিষ্টি রোদের। রোদ শেষে আবার কুয়াশা,এ যেন অদ্ভুত এক সৌন্দর্য্যের মিলনমেলা। এ সময়ে গ্রামীণ জনপদে দেখা মেলে খেজুর গাছ থেকে রস আহরণের অসাধারণ দৃশ্য।
ভোরে খেজুর রস আহরণের বিষয়টি বেশ বিস্ময়ের। খেজুর গাছকে বলা হয় ‘মধুবৃক্ষ’। এ গাছ থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে রস আহরণ করা হয়। শীত যত বাড়ছে,খেজুরের গুড়ের চাহিদাও ততই বাড়ছে। তাই শীত মানেই পিঠে-পুলি-পায়েস যা খেজুর গুড় ছাড়া ভাবাই যায় না। বর্তমানে অবশ্য ভেজালের যুগে এই গুড়ের স্বাদ আগের মতো পাওয়া যাচ্ছে না এভাবেই বলছিলেন স্থানীয় কৃষকরা।গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য শীত মৌসুমে গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে খেজুর রস ও গুড় দিয়ে তৈরি হয় নানান রকমের বাহারি পিঠাপুলি ও পায়েস। তাই বাণিজ্যিক ভাবেও খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। এবিষয়ে গাছিরা জানায়,প্রতিদিন বিকালে তারা খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে বিভিন্ন রকমের মাটির হাড়ি লাগিয়ে রাখেন। পরদিন ভোরে সব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে স্হানীয় ভাবে গ্রাম ও শহরে বিক্রি করেন। একই সাথে তারা
টিনের বড় পাত্রে জ্বাল দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে থাকেন। জানা গেছে,ভারত সীমান্তবর্তী দিনাজপুর জেলার বিরামপুর ও ফুলবাড়ী উপজেলায় রেল লাইনের দুপাশে খেজুর গাছের সংখ্য বেশি। রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে আসা গাছিরা শীতের শুরুতেই গাছ থেকে খেজুর রস সংগ্রহ করেন। দুই উপজেলার রেললাইনের পাশে ২৫০ টি খেজুর গাছ আছে। তারা এসব খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ ও গুড় তৈরি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।বিরামপুর উপজেলার মৌপুকুর এলাকায় ও ফুলবাড়ী উপজেলার বারোকোনা এলাকায় বাহিরে থেকে আসা খেজুর রস সংগ্রহকারী দল
খেজুরের গুড় তৈরির কাজে চলে এসেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা গুড় তৈরির কাজ করে আসছেন। বছরের পাঁচ মাস তাঁরা এই কাজ করেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এই ব্যবসা করেন।
শুরুতেই ২০-২৫ কেজি করে খেজুরের গুড় তৈরি হয়। পর্যায়ক্রমে বেড়ে ১-২ মণ পর্যন্ত গুড় তৈরি হয়। প্রতি কেজি খেজুরের গুড় বাজারে পাইকারদের কাছে ১৮০ টাকায় এবং খুচরা ২০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ঘরে ঘরে খেজুর রসের পিঠা,পায়েস,গুড়ের মুড়ি-মুড়কি ও নানা ধরনের মুখরোচক খাবার তৈরির ধুম পড়ে এ সময়। তবে অনেকেই বলছেন,বাজারে চিনির দাম বেশি এবং চিনির দামের থেকে একটু বেশি হলেও সুস্বাদু হওয়ায় খেজুরের গুড়ের চাহিদা রয়েছে বেশ।
ভোরেই গুড় কিনতে আসা ক্রেতারা বলেন,শীত শুরু হয়েছে। পিঠা-পায়েস খেতে স্বাদে গন্ধে সুস্বাদু খেজুরের গুড়ের জুড়ি নেই। গাছিদের তৈরি গুড় মানসম্মত! সে কারণে এখানে গুড় কিনতে এসেছি। এরই সাথে পাড়া মহল্লায় গাছিরা খেজুরের রস বিক্রয় করছেন। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় ছোট বড় সকলেই রস কিনে খাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার পিঠাপুলি খেতে ২-৩ কেজি আবার কেহ ৫কেজি পর্যন্ত কিনে নিচ্ছেন।
শীতকাল আসলেই সারা বছর ফেলে রাখা খেজুর গাছের যত্ন বেড়ে যায়। কারণ,খেজুর গাছ থেকে আহরণ করা সুমিষ্ট ও মূল্যবান রস দিয়ে তৈরি করা হয় গুড়-পাটালি। তাছাড়া শীতের সকালে এক গ্লাস খেজুরের রস খেলে আত্মার তৃপ্তি আনে। শীত যত বাড়ে খেজুর রসের মিষ্টিও তত বাড়ে। শীতের আমেজকে বাড়িয়ে দিতে খেজুরের রসের জুড়ি নেই। শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। খেজুর গাছ কেটে পরিষ্কার করে শুরু করেন রস সংগ্রহ।
খেজুরের রস সংগ্রহকারীরা প্রতিদিন বিকেলে নলি,কোমরবন্ধ রশি সাথে নিয়ে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি ও হাড়ি (মাটির পাত্র) বেঁধে রাখেন। মাটির কলসিতে সারারাত রস জমে যায়। ভোরের আলো বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছিরা রস ভর্তি মাটির ভাঁড় নামিয়ে এনে এক জায়গায় জড়ো করেন। পরে এই রস টিনের ট্রে (তাবাল) পাত্রে জ্বাল দিয়ে ঘন করে গুড় মাটির ভাঁড় (হাঁড়ি) বা বিভিন্ন আকৃতির পাত্রে রাখা হয়। গুড় জমাট বেঁধে পাত্রের আকৃতি ধারণ করেন। কখনও কখনও এর সঙ্গে নারিকেল কিম্বা তিল মিশিয়ে ভিন্ন স্বাদ দেওয়া হয়।
খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা নলের গুড়,ঝোলা গুড়,দানা গুড় ও বাটালি গুড়ের মিষ্টি গন্ধেই যেন অর্ধভোজন হয়ে যায়। সাধারণত চার বছর বয়সের পর থেকে খেজুর গাছের রস আহরণ শুরু হয়। যখন গাছে ১২-১৫টি পাতা থাকে। খেজুরের চিনি,গুণমান ইত্যাদির পরিমাণ মাটি,জলবায়ু এবং খেজুরের প্রকারের উপর নির্ভর করে। পুরুষ গাছ স্ত্রী গাছের চেয়ে বেশি রস দেয় এবং রসও তুলনায় বেশি ও মিষ্টি হয়ে থাকে।
কেউ কেউ কাঁচা রস বাজারে বিক্রি করেন। শীতের সকালে অনেকেই গ্রামে কিনতে আসেন খেজুরের রস। তারা বাসায় নিয়ে পিঠে,পায়েস রান্না করে সবাই মিলে খায়,অনেকে আবার মেয়ে-জামাইকে এই সময়টাতেই নিমন্ত্রণ জানায়। প্রতি বছর হেমন্তেই শুরু হয় গাছিদের মহাব্যস্ততা। শীতকাল জুড়েই তাদের এই ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। গ্রামীণ জনপদে খেজুর গাছ ও গাছিদের নিবিড় সম্পর্ক চোখে পড়ে। অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে ঐতিহ্যের খেজুর গাছ কেটে গাছিরা রস আহরণ করেন। দেশজুড়ে এ রসের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। বিশেষ করে শীতকালে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি ঘরেই খেজুর রস দিয়ে চলে পিঠা-পুলি তৈরির হরেক আয়োজন হয়ে থাকে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

About Us

Felis consequat magnis est fames sagittis ultrices placerat sodales porttitor quisque.

Get a Quote

@ দৈনিক বাংলা ৭১ প্রতিদিন পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

Theme Customized BY LatestNews