দিনাজপুরের হিলিতে বেড়েছে মসলার দাম
নিজস্ব প্রতিবেদক: রমজান মাসে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে বেড়েছে বিভিন্ন মসলাজাত পণ্যের দাম। প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে জিরা, ছোলা, বাদামসহ বিভিন্ন মসলা আসার পরেও দাম বাড়ায় উদ্বিগ্ন ক্রেতারা। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে জিরার দাম। এক মাস আগে যে জিরার কেজি ছিল ৫৫০ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। বিক্রেতারা বলছেন, বন্দর থেকে পাইকারি কিনতেই বেশি দাম পড়ছে। তাই তারা বেশি দামে বিক্রি করছেন।
হিলি বন্দরের আমদানিকারক মো. শাহীনুর রেজা শাহিন বলেন, ‘ডলার সংকট ও এলসি জটিলতার কারণে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে মসলাজাতপণ্য আমদানির পরিমাণ অনেক কম ছিল। তাই দাম বেড়েছে। প্রতিবছরের মতো এবারও রমজান মাসের শুরু থেকেই আমদানি নির্ভর মসলাজাতপণ্য আমদানি শুরু করেছে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা।’
শাহীনুর রেজা আরও বলেন, ‘ডলারের দাম উঠানামা করায় কিছু মসলার দাম বেড়েছে, আবার কিছুর দাম কমেছে।’
আমদানিকারক মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাসে ছোলার চাহিদা বেড়ে যায়। তাই আমদানিকারকেরা ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকেই ভারতীয় ছোলা আমদানি শুরু করেছেন। বন্দর অভ্যন্তরে প্রতিকেজি ছোলা পাইকারি প্রকার ভেদে ৭৭ থেকে ৭৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে।’
ক্রেতা জামাল বলেন, ‘যেসব মসলার দাম বেড়েছে, সেগুলো আমাদের প্রতিদিন কাজে লাগে। দাম বাড়লেও বাধ্য হয়ে কিনতে হয়।’
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি মো. হারুন-উর-রশিদ হারুন বলেন, ‘বর্তমানে এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ছোলা, মসুর ডাল, জিরা, আদা, রসুন, এলাচ ও বাদামসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য আমদানি হচ্ছে।’
হিলি বাজারের মসলা খুচরা বিক্রেতা মো. মোকারম হোসেন বলেন, ‘বাজারে যেসব মসলা বিক্রি হয় সবই ভারত থেকে আমদানি করা। গেলো এক মাসের ব্যবধানে কিছু মসলার দাম বেড়েছে আর কিছু পণ্যের দাম কমেছে। আমরা এক মাস আগে প্রতিকেজি জিরা প্রকারভেদে ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। আর আজ বিক্রি করছি ৬৫০ টাকা কেজি দরে। প্রতিকেজি ছোট (সাদা) এলাচ ১৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও এখন তা কমে বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা। কালো এলাচ ১০০০ টাকা থেকে কমে বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়, ১২০ টাকা কেজি দরের আদা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, আবার দাম বেড়েছে লং ও গোল মরিচের ১৩৫০ টাকা কেজির লং বিক্রি হচ্ছে ১৪২০ টাকা, আর প্রতিকেজি গোল মরিচ বিক্রি ৫৮০ টাকা কেজি দরে। যে গোল মরিচ এক মাসে আগে বিক্রি হয়েছে ৪৮০ টাকা কেজি দরে।’
হিলি কাষ্টমস সুত্রে জানা গেছে, গত মার্চ মাসে হিলি বন্দর দিয়ে ২১৯ ট্রাকে ৮ হাজার ৪৭৭ মেট্রিক টন ছোলা, ১৫৬ ট্রাকে ৪ হাজার ২৭৬ মেট্রিক টন জিরা , ১ ট্রাকে ২৮ মেট্রিক টন এলাচ ও ৫২ ট্রাকে ৯২২ মেট্রিক টন আদা আমদানি হয়েছে।
পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিডেটের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক প্রতাপ এ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘মসলাজাতপণ্য বন্দর থেকে আমদানিকারকরা যাতে দ্রুত খালাস করতে পারে সেজন্য আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’